Physical Address
304 North Cardinal St.
Dorchester Center, MA 02124
বাসা-বাড়ি কিংবা অফিস, এখন সবখানেই ব্যবহার করা হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে আমাদের প্রয়োজন পড়ে একটি রাউটার। কিন্তু রাউটারের ওয়াই-ফাই স্পীড নিয়ে আমরা প্রায় সবাই চিন্তিত। আমরা অনেকেই জানতে আগ্রহী, যে কীভাবে ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানো যায় বা ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর উপায় কী? যারা এই ধরনের সমস্যায় আছেন অর্থাৎ জানতে চাচ্ছেন ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর উপায় কী তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি উপকারী হবে। আজকে আমরা ওয়াই-ফাই এর স্পীড বাড়ানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো।
ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানোঃ কয়েক বছর আগের পুরনো রাউটারগুলোতে কম ফ্রিকোয়েন্সি অর্থাৎ ২.৪ গিগাহার্টজের স্পীড ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখনকার প্রায় সব ওয়াই-ফাই রাউটারে ডুয়াল ব্যান্ড ব্যবহার করা হয়। এতে প্রয়োজন অনুযায়ী ২.৪ গিগাহার্টজ কিংবা ৫ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা যায়। ওয়াই-ফাই এর স্পীড বাড়ানোর অন্যতম সহজ ও কার্যকরী উপায় হলো রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো।
তবে এই দুইটা ব্যান্ড ভিন্ন ভিন্নভাবে কাজ করে। আপনি যদি রাউটারে ২.৪ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করেন তাহলে ওয়াই-ফাই এর স্পীড কম পাবেন, কিন্তু এরিয়া কাভারেজ অনেক বেশি পাবেন। অপরদিকে আপনি যদি রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ান তাহলে তুলনামূলক অনেক ভালো ওয়াই-ফাই স্পীড পাবেন, কিন্তু আগের তুলনায় এরিয়া কাভারেজ কম পাবেন। অর্থাৎ আপনি যদি অল্প জায়গার মতো মধ্যে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করতে ও বেশি স্পীড পেতে চান তাহলে রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াতে পারেন, এটা হলো ওয়াইফাই স্পীড বাড়ানোর ভালো উপায়।
সঠিক স্থানে রাউটার বসানোঃ আমরা অনেক সময় পাশের বাসার আন্টির চোখের আড়াল করতে রাউটার খাটের নিচে বা ঘরের কোন চিপার মধ্যে রাখি। কিন্তু এটাই হলো ওয়াই-ফাই স্পীড কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। তাই আমাদেরকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় রাউটার সঠিক স্থানে বসাতে হবে।
বাড়ির এমন কোন ফাকা স্থানে রাখতে হবে যেখানে থেকে বাড়ির চারিপাশে ওয়াই-ফাই রেঞ্জ সঠিকভাবে পৌছাতে পারে। এক্ষেত্রে দেয়ালের কোল ঘেঁষে না রাখা; যেসব ডিভাইস থেকে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক বিকিরণ হয় যেমনঃ মোবাইল, টেলিভিশন, রেডিও, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ওভেন ইত্যাদি থেকে দূরে রাখা। এছাড়াও বাড়ির চারিপাশে সমানভাবে ওয়াই-ফাই স্পীড পৌছে দেয়ার জন্য রাউটার উঁচু স্থানে রাখতে হবে, মোটামুটি ৫/৬ ফুট উঁচু স্থানে রাখুন। ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর অন্যতম উপায় হলো রাউটারকে সঠিক স্থানে রাখা।
অপ্রয়োজনীয় কানেকশন বন্ধ রাখাঃ ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর আরেকটি কার্যকরী উপায় হলো রাউটার থেকে অপ্রয়োজনীয় ডিভাইস ডিসকানেকটেড রাখা। আপনি যখন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন বা যখন ভালো ইন্টারনেট স্পীড দরকার তখন বাসার অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইস যেমনঃ টিভি, মোবাইল ফোন, লাইট, ফ্যান ইত্যাদি ওয়াইফাই থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখুন। কারণ আপনার কাজের সময় হয়তো ওগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে না বা বেশি গুরুত্বপূর্ণ না, তাই বাকি স্মার্ট ডিভাইসগুলো বিচ্ছিন্ন করে রাখলে ওয়াই-ফাই এর সম্পূর্ণ স্পীড আপনি পাবেন। এতে করে কাজ করা সহজ হবে।
রিপিটার ব্যবহার করাঃ আমাদের যাদের রাউটারের কাভারেজ কম কিন্তু ভালো কাভারেজ পেতে চাচ্ছি তাদের জন্য ওয়াইফাই স্পীড বাড়ানোর অন্যতম কার্যকরী ও সবচেয়ে ভালো উপায় হলো একটি ভালো মানের রাউটার রিপিটার ব্যবহার করা। এতে করে আমরা বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের যে স্থানে ওয়াই-ফাই কাভারেজ পায়না সেখানেও ভালো ইন্টারনেট স্পীড পেয়ে যাবো। একটা রিপিটার আপনার রাউটারের রেঞ্জ দীর্ঘায়িত করে তা আগের তুলনায় বেশি এলাকায় ছড়িয়ে দিতে সক্ষম। এছাড়াও যেসকল স্থানে গ্লাস সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বেশি থাকে সেখানে স্বাভাবিকভাবে ওয়াই-ফাই স্পীড কম থাকে। তাই ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর ভালো উপায় হলো রিপিটার ব্যবহার করা।
ইথারনেট ক্যাবল ব্যবহার করাঃ আমরা যারা অফিসে গুরুত্বপূর্ণ কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকি তারা নিশ্চয়ই দেখেছি যে কম্পিউটারগুলো ইথারনেট বা অন্য কোন ক্যাবল দ্বারা রাউটারের সাথে যুক্ত থাকে। আসলে রাউটার থেকে ওয়াইফাই বা ওয়ারলেস ইন্টারনেট ব্যবহার করলে অনেক সময় ইন্টারনেট স্পীড কম-বেশি হতে পারে। অর্থাৎ কখনো স্পীড স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যেতে পারে। তাই বাসায় যখন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন বা ভালো মানের ইন্টারনেট স্পীড লাগবে তখন পিসিতে ইথারনেট ক্যাবল ব্যবহার করে ইন্টারনেট ইউস করতে পারেন। ইথারনেট ক্যাবল ব্যবহার করা ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর ভালো উপায়।
রাউটার রিসেট করা ও বন্ধ রাখাঃ মানুষের মতো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসেরও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। আপনি যদি টানা ২৪ ঘন্টা কোন রাউটার ব্যবহার করেন তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তার কার্যক্ষমতা কমে যাবে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতামত হলো রাউটার মাঝে মাঝে ১৫/২০মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা। এতে করে ডিভাইসটি বিশ্রাম নিতে পারবে এবং পুনরায় শক্তি সরবরাহ করতে পারবে। এছাড়াও রাউটার অনেকদিন ধরে ব্যবহার করতে এতে নানা ধরনের ডেটা জমে যায়। তাই ওয়াই-ফাই রাউটার ৬/৮ মাস অন্তর অন্তর রিসেট করলে দীর্ঘদিন ভালো থাকে এবং এর কার্যক্ষমতা ভালো থাকে। তাই ওয়াই-ফাই স্পীড বাড়ানোর অন্যতম উপায় হলো রাউটার রিসেট করা ও বন্ধ রাখা।